‘আওয়ামী লীগের মাথা না ঘামালেও চলবে’
সাদাকালো নিউজ
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা না ঘামালেও চলবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকার নাটক শুরু করেছে। তাকে নিয়ে এত দরদ উথলে উঠলো কেনো! সরকার দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। তার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে তখন করবেন… যেখানেই থাকুক। এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা না ঘামালেও চলবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার সুযোগ আছে কি না, তা নিয়ে পরস্পর বিপরীত বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না, এ রকম কথা তো কোথাও নেই।’
একই দিন বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সভার পর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া কি দণ্ডাদেশ থেকে মুক্তি পেয়েছেন? দণ্ডিত ব্যক্তির রাজনীতি করার সুযোগ কোথায়?’
এর আগে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকও বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির ক্ষেত্রে রাজনীতি করা নিয়ে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। তিনি রাজনীতি করতে পারবেন তবে নির্বাচন করতে পারবেন না।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে ঘরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতি করতে পারেন না।
ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের এমন মন্তব্য আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি আইসিইউতে যাবে না। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ইতিমধ্যে আইসিইউতে চলে গেছে। অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা আওয়ামী লীগ নিজে, সরকার নিজে। অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে এবার লাভ হবে না। সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন এগিয়ে যাবে।‘
দেশ খাদের কিনারায় চলে আসছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিদ্যুৎ গ্যাস জ্বালানির দাম বেড়েছে। সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই। তাদের দরকার শুধু টাকা। বিদ্যুৎ আমদানির নামে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি দুর্নীতি এমন পর্যাযে চলে গেছে কেউ বিনিয়োগ করছে না- এজন্য দায় সরকারের।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি এ সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। ১৫৪ জনকে বিনাভোটে সংসদ সদস্য বানিয়ে দিয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় পার্টি বাম দলের লোক আছে। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় এখন তাদের অনেকেই কথা বলছে। তারা আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ।’
সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এটিই তার দলের একমাত্র লক্ষ্য জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিনের হরতাল যখন করেছে তখন সংবিধানে ছিল না। সংকট সমাধানে খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই কমিশন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সে নির্বাচনের জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করবে।’