ক্যান্সার আক্রান্ত প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন প্রেমিক
নাফিজা আক্তার
হাসিখুশি মেয়েটার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল টগবগে তরুণটির। তারপর প্রেম। একদিন জানা গেল- মেয়েটির শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। চিকিৎসার ত্রুটি করেনি পরিবার। চট্টগ্রাম ও ঢাকায় চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিয়ে যান প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সেখানে দীর্ঘ চিকিৎসা চলে। ক্যান্সারের চিকিৎসার চতুর্থ ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হয় ওষুধপত্র। কারণ চিকিৎসার ধকল সহ্য করার মতো জীবনীশক্তি তার আর নেই।
তারপর চট্টগ্রামের মেডিকেল সেন্টারের শয্যায় অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে মেয়েটি। কিন্তু প্রেমিক তরুণ হাল ছাড়েননি। গত ৯ মার্চ রাতে হাসপাতালের শয্যাতেই বেনারসি পরিয়ে, বউ সাজিয়ে ১ টাকা কাবিনে বিয়ের আয়োজন করেছেন। একইসঙ্গে ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছেন মাহমুদুল।
হাসির রেখা ফুটে উঠে অক্সিজেনের নল লাগানো কনের মুখে। দুই পরিবারের সম্মতিতে হয় সেই বিয়ে। এভাবে সিনেমার প্রেম কাহিনীকেও হার মানাল মাহমুদুল হাসান ও ফাহমিদা কামাল।
চকরিয়ার ছেলে মাহমুদুল হাসান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ বাকলিয়ার মেয়ে ফাহমিদা কামাল ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবনে তাদের দু’জনের পরিচয়।
তরুণী ফাহমিদাকে ভালো লাগার পর কথা বলা হাসানের। এরপর ধীরে ধীরে দুজনে জড়ান প্রেমের সম্পর্কে। হাতে হাত ধরে স্বপ্নে বিভোর হয়ে নতুন ভুবনে উড়ার প্রস্তুতি নেওয়ার পথেই তাদের জীবনে আসে দুঃসংবাদ। দীর্ঘ একবছর চিকিৎসার পর ডাক্তাররা সাফ জানিয়ে দেন- ফাহমিদার চিকিৎসা আর সম্ভব নয়।
পাথর চাপা কষ্ট নিয়ে পরিবারের লোকজন ২৫ বছর বয়সী ফাহমিদাকে চট্টগ্রামে নিয়ে এসে মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করান। সেখানে ডা. সাজ্জাদ বিন ইউসুফের তত্ত্বাবধানে চলতে থাকে চিকিৎসা। কিন্তু ক্রমাগত ফাহমিদার শারীরিক অবস্থায় অবনতি হতে থাকে।
‘ক্ষীণ সম্ভাবনা’ এমন এক ক্যান্সার আক্রান্ত প্রেমিকাকে বিয়ে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন মাহমুদুল। নব-দম্পতির জন্য শুভ কামনা ও ফাহমিদার রোগমুক্তি কামনা করছেন চেনা-অচেনা সবাই।