কীভাবে বন্ধুত্ব থেকে বিয়ে পর্যন্ত গড়ালো মাহি-রাকিবের প্রেম
জহুরা প্রিতু
জীবনে প্রেম আসে। কখনো একবার, কখনো বা বারবার। জীবনে কখন কীভাবে প্রেম আসবে কেই বা বলতে পারে? ঢাকাই নায়িকা মাহিয়া মাহির জীবনেও হুট করেই এসেছে প্রেম। প্রথম স্বামীর সাথে থাকা অবস্থাতেই। যে প্রেমকে তিনি বলেছেন— জাস্ট ফ্রেন্ডশীপ। সাদাকালো নিউজ মাহিয়া মাহি এবং তাঁর দ্বিতীয় স্বামী রাকিবের ফেসবুক প্রোফাইল বিশ্লেষণ করে বের করার চেষ্টা করেছে এই জুটির কাছে আসার গল্প।
গত মে মাসে মাহিয়া মাহি নিজেই ফেসবুকে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের খবর জানান। বিচ্ছেদের পর থেকেই ঢালিউড এই অভিনেত্রীর বিভিন্ন ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে শুরু হয় গুঞ্জন। গুঞ্জনের কেন্দ্রে চলে আসেন কামরুজ্জামান সরকার রাকিব। মাহিয়ার প্রায় সব পোস্টেই দিতে থাকেন লাভ রিয়াক্ট আর কমেন্ট। মাহিয়াও নিয়মিত দেন উত্তর।
জুন মাসের এক রাতে হঠাৎ করেই মাহি তাঁর ফেসবুকে লেখেন, ‘ওয়েল, আই ক্যান ফিল ইউ ইন সংস, মুভিজ অ্যান্ড এভরিহয়ার, আলহামদুলিল্লাহ। এখান থেকেই গুঞ্জনের শুরু।
সেদিন মেহেদিতে রাঙানো ছিল মাহির হাত। আর পরনে ছিল একটি কাতান শাড়ি। সেই শাড়ি পরা একটি ছবিতে তাঁর পাশেই গাজীপুরের রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান সরকার রাকিব।
এক দিন পরই একই শাড়িতে বেশ কটি ছবি পোস্ট করে মাহি ফেসবুকে লেখেন, ‘ধরো তোমার প্রেমে পড়লাম আর উঠলামই না।’
সেই পোস্টে রাকিবের মন্তব্য দরকার নাই। সাথে লাভ রিয়াক্ট। কমেন্টের উত্তরও দেন মাহি।
এখানেই শেষ নয়। জুন থেকেই ধারাবাহিকভাবে রোমান্টিক স্ট্যাটাস দিতে থাকেন মাহি। ভক্তদের মনেও বাড়তে থাকে কৌতুহল।
১৪ই জুন মাহির স্ট্যাটাস, ‘মিসিং ইউ।’ একই দিন আরেকটি স্ট্যাটাসে মাহি লেখেন, এক সমুদ্র ভালোবাসার পরেও যার অন্যের প্রতি থাকে ঝোঁক, সেই মানুষটা আমার না হোক? সেখানে রাকিবের কমেন্ট, অনেক কিছু লিখছিলাম কিন্তু মুছে দিছি।
পরের দিনই রাতে মাহির গাড়ি চালানোর ছবি। ১৮ই জুন জানালেন, ‘আমি সারা দুনিয়া ঘুরিয়া দেখি, সুখ তো আমার ব্যালকনিতেই ছিল।’এই স্ট্যাটাসে রাকিব আলহামদুলিল্লাহ লিখে যোগ করে দেন লাভ রিয়াক্ট। পাল্টা লাভ রিয়াক্ট মাহিরও।
২৭ জুন মাহি লেখেন, একজন কেউ থাকুক যে তোমাকে ছাড়বেনা। পরের দিনই লিখেন, ‘যদি আমায় ভালোবাসো নব সাজে এসো।’ সাথে জোসনা রাতের ছবি। গুঞ্জন ওঠে রাকিবের সাথেই কাটছে তাঁর দিন।
পরের মাসেই ঘুরতে যাওয়ার স্ট্যাটাস। ১৪ জুলাই ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি ১২ বছরের সম্পর্ক ভেঙে যেতে দেখেছি, আবার ১২ দিনের সম্পর্ক আজীবন টিকে যেতেও দেখেছি।’ এর ২ দিন পরই লেখেন ‘জীবন অনেক সুন্দর।’ সাথে একাধিক স্ট্যাটাস। মিস করছেন কাউকে। এই কেউ যে রাকিব তা সব সময়ই কমেন্টে লিখে চলেছিল মাহির ভক্তরা। কিন্তু মাহি নিশ্চুপ।
১৯ জুলাই, এক গুচ্ছ কদম ফুল হাতে নিয়ে মাহি লেখেন, ফুরিয়ে যাকনা সময় তোমাকে দেখে দেখে। সেখানে রাকিবের কমেন্ট, মাস চলে সপ্তাহের গতিতে। লাভ রিয়াক্ট। মাহিও বসে থাকেননি, লিখেছেন- ওরে মা। বুঝতে বাকি থাকে না, রাকিবের সাথে ভালোই দিন কাটছে তাঁর।
এর ১০ দিনের মধ্যেই মাহির আকুতি, আমার মন ভালো করে দিয়ে যাও। সেখানেও কমেন্টে হাজির রাকিব। দিলেন টিক চিহ্ন। বুঝিয়ে দিলেন, মন ভালো করতে আছেন তিনি।
এর দুই দিন পরেই আবার রাতের লং ড্রাইভের ছবি। মাহি জানালেন, নতুন মিরাকলের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। রাকিবের মন্তব্য মিরাকল তো সবখানেই। বুঝতে বাকি থাকে না, কোন মিরাকলের কথা বলছে, নতুন প্রেমে মত্ত থাকা এই যুগল।
এরপর ৬ আগস্ট, তিনবার আলহামদুলিল্লাহ্ লেখার পর গুজব ছড়িয়ে পড়ে বিয়ে করেছেন মাহিয়া মাহি। এর ৩ দিন পরেই আবার মাহিয়ার মন খারাপ করা স্ট্যাটাস। জানালেন, জোসনা রাতে দুজন পাশাপাশি হেটে কাছে এসে, দূরে সরিয়ে দিলে। রাকিবের অভিমানি জবাব, এসব বলেনাহ।
এরপর মধ্য আগস্ট পর্যন্ত ফেসবুকে দুজনের খুনসুটি। ১৭ আগস্ট, সমুদ্র ঘুরতে যাওয়ার ১ দিন ৯টি ছবি দেন মাহিয়া মাহি। সেখানে রাকিবের মন্তব্য, সব সুন্দর। ইঙ্গিতপূর্ণ এই মন্তব্যে তখন আলোচনা শুরু হয়, হানিমুনের গিয়েছেন নায়িকা মাহি।
এরপর ২৫ তারিখ পর্যন্ত শুধুই ঘোরাঘুরি। আর ফেসবুকে দেয়া প্রায় সব পোস্টেই রাকিবের ভালোবাসার প্রকাশ। ইঙ্গিতপূর্ণ স্ট্যাটাস।
২৮ তারিখ মাহিয়া মাহি দাবি করে বসলেন তাঁর পেজ নাকি হ্যাক হয়েছে। তিনদিন আগে দেয়া পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষটা আমি। উপরওয়ালা তুমি জাস্ট ওয়াও। আলহামদুলিল্লাহ। এই স্ট্যাটাস নাকি তাঁর নয়।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই মাহিয়ার ফেসবুকে বিসাদের সুর। হঠাৎ করেই ৬ তারিখে জানালেন, ১৩ তারিখে সারপ্রাইজ দেবেন তিনি।
একদিন পরেই মন খারাপ মাহির। একটা মন মরা ছবি দিয়ে সে কথা জানালেন। কিন্তু কমেন্টে দেখা নেই রাকিবের!
একদিন পরেই আবার মাহির স্ট্যাটাস, মিসিং। এবার আর অভিমান করে থাকেননি রাকিব। কমেন্টে জানালেন, আমি কমেন্ট করি না। মাহির উত্তর- এটা কি তাহলে?
এক সপ্তাহ পর ১৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে মাহির স্ট্যাটাস, আলহামদুলিল্লাহ। আজ ১৩/০৯/২১ ইং ১২:০৫ মি: আমাদের বিবাহ সম্পন্ন হলো । এর আগের সব কথা আসলেই গুজব ছিলো । সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন এটাই একমাত্র চাওয়া।