কপাল খুলছে জাহাঙ্গীর আলমের!
সাদাকালো নিউজ
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাজিমাত করেছেন জায়েদা খাতুন। নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লাহকে হারিয়ে মেয়রের আসনে বসেছেন তিনি। তবে এর নেপথ্যে ছিলেন তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে নানা চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে জাহাঙ্গীরকে।
সবশেষ গেল মে মাসে আওয়ামী লীগ থেকে চিরতরে বাদ দেয়া হয় জাহাঙ্গীর আলমকে। কারণ হিসেবে বলা হয়, দল থেকে ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ নিয়ে দলের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীর। ওই সময় দলীয় এক বৈঠকে উপস্থিত বেশিরভাগ সদস্য এই প্রস্তাবকে সমর্থন দেন। এমনকি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য সুপারিশ পাঠানো হয় দলের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে।
তবে এবার সুখবর পেতে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীর। খুব তাড়াতাড়ি দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ আসছে তার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে এমন ইঙ্গিত নাকি পেয়েছেন জাহাঙ্গীর ও তার মা মেয়র জায়েদা খাতুন।
জানা গেছে, ১৭ই জুলাই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান জায়েদা খাতুন। সঙ্গে নিয়ে যান ছেলে জাহাঙ্গীরকেও। সেখানে প্রায় ১০ মিনিটের সাক্ষাৎ হয় তাদের। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় হয়। অন্যান্য আলাপের মাঝে জাহাঙ্গীরের প্রসঙ্গ তুলেন জায়েদা খাতুন। বলেন, ‘আমার ছেলেতো আপনার ছেলে। আপনার ছেলেকে আপনার কাছেই নিয়ে এসেছি।’
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন জাহাঙ্গীর। রাজনীতি থেকে তাকে সরিয়ে দিতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী জাহাঙ্গীরকে কাঁদতে নিষেধ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দেখা করতে বলেন। একিসঙ্গে ভবিষ্যতে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কোনো কাজের সাথে জাহাঙ্গীর যেন জড়িত না হন সেই ব্যাপারে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। জবাবে জাহাঙ্গীর এবং তার মা ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন গাজীপুর। এখানে ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মেয়র হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। গেল ২৫ মের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। অবস্থান বুঝে প্রার্থী করেন মা জায়েদা খাতুনকেও।
পরে ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ায় জাহাঙ্গীরের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর মাকে জেতাতে দিন-রাত ভোটের মাঠ চষে বেড়ান জাহাঙ্গীর।
অপরদিকে ভোটের প্রচারণায় জায়েদা খাতুনও নিজেকে জাহাঙ্গীরের মা হিসেবেই পরিচয় দেন। ফলে ভোটের লড়াইয়ে কার্যত আজমত উল্লার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাহাঙ্গীর। মায়ের বিজয়ের পর থেকেই জাহাঙ্গীরের আওয়ামী লীগে ফেরার বিষয়ে চলছে চাপা গুঞ্জন।