এডিপি বাস্তবায়ন ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
সাদাকালো নিউজ
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি আরও ধীর হয়ে এসেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত গত ৯ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। মোট বরাদ্দের মাত্র ৪১ দশমিক ৬৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে এ সময়। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৫ শতাংশেরও বেশি।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৯ মাসে এডিপিতে ব্যয় হয়েছে ৯৮ হাজার ৫২১ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে একই সময়ে খরচের পরিমাণ ছিল ৯৮ হাজার ৯৩৪ কোটি। অর্থাৎ টাকার অঙ্কেও কমেছে বাস্তবায়ন।
গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছর এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ বেশি। সে বিবেচনায় বাস্তবায়নের হার কম হলেও টাকার অঙ্কে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি থাকার কথা। সংশোধনের পর চলতি অর্থবছর এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ১৯ হাজার ৬০২ কোটি টাকা।
অবশ্য একক মাস হিসেবে মার্চে বাস্তবায়ন অগ্রগতি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কিছুটা বেশি। মাসটিতে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। গত বছর মার্চে যা ছিল ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। মার্চে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। গত বছরের মার্চে এর পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ১৭০ টাকা। অর্থাৎ মার্চে টাকার অঙ্কেও বাস্তবায়ন বেড়েছে।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ৯ মাসে এডিপির সরকারি অংশের ৫৬ হাজার ১৫১ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২ দশমিক ১৫ শতাংশ কম। অন্যদিকে, বৈদেশিক ঋণ থেকে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে বরাদ্দের ৫২ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ৫০ শতাংশের কিছু কম। যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে, অর্থাৎ করোনা অতিমারি আঘাত হানার আগে এটি ছিল ৫৭ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাস অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং ডলারের ঘাটতির কারণে বাংলাদেশ সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে সাবধানী হয়। যার ফলে সার্বিকভাবে সরকারি তহবিলের ব্যবহার হ্রাস পেয়ে থাকতে পারে।
বৃহৎ বরাদ্দের ১৫টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বাস্তবায়নের দিক দিয়ে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে আছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়টি তাদের মোট বরাদ্দের মাত্র ২৭ দশমিক ২৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের খরচেও একই পরিস্থিতি।