একাকিত্ব কমানোর উপায়
একা থাকা আর একাকিত্ব বোধ করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
কেউ একা থেকেও সুখী হতে পারে। আবার অনেকের মাঝে থেকেও কেউ একাকিত্ব বোধ করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিং ডি.সি’তে অবস্থিত বিশ্লেষণ ও পরামর্শ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান গ্যালআপ’য়ের করা ২০২৩ সালের ‘মেটা-গ্যালআপ’ জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে- বিশ্বের প্রায় চারজনের একজন অতিমাত্রায় বা মোটামুটিভাবে একাকী।
মার্কিন সার্জন জেনারেল ডা. ভিভেক মার্থি’র উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, “দীর্ঘদিন ধরে একাকিত্বের ছায়াতে থাকলে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা বাড়তে পারে।”
একাকিত্বে যখন সাহায্যের প্রয়োজন হয় তখনই সেটা সমস্যায় রূপ নেয়। আর সমাধান হতে পারে শক্তিশালী সম্পর্ক।
শুরুটা হোক ছোট থেকে
হতে পারে নতুন বন্ধু গজানো বা যারা আছে তাদের কাউকে কাছে টানা- যেটাই হোক শুরুটা ছোট-ভাবেই করা দরকার- সিএনএন ডটকম’য়ের আরেকটি প্রতিবেদনে পরামর্শ দিয়েছিলেন ‘ফ্রেন্ডশিপ ইন দ্য এইজ অফ লোনলিনেস’ বইয়ের মার্কিন লেখন অ্যাডাম স্মাইলি পজওলস্কি।
এই ক্ষেত্রে সপ্তাহে একবার কাউকে ‘টেক্সট’ করে খবর নেওয়া, নতুন কারও সাথে দেখা করা, মাসিক বা দৈনিক যোগাযোগ রক্ষা- হতে পারে ছোট ছোট পদক্ষেপের অংশ।
“যদি একটা কাজই করতে চান তবে অন্তত পাঁচজনকে বাছাই করুন যাদেরকে আপনি ‘কেয়ার’ করেন। তাদের মধ্যে কোনো একজনকে ফোন দিন”- বলেন পজওলস্কি।
“সাধারণত সাংঘাতিক রকমের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে খুবই ছোট যোগাযোগের মাধ্যমে।”
গবেষণায় দেখা গেছে- কাউকে বন্ধু ভাবার জন্য ৯০ ঘণ্টা একসঙ্গে কাটানোর দরকার হয়। ২০০ ঘণ্টা কাটালে ধরে নিতে হবে খুবই কাছের বন্ধু যার সাথে মানসিক যোগাযোগ তৈরি হয়েছে- জানান এই লেখক।
তিনি বলেন, “আমাদের এই ব্যস্ত পৃথিবীতে বন্ধুত্বকে তারিখের মতো মনে রেখে কিছু কাজ বার বার করা মতো পর্যায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।”
সীমারেখা তৈরি করা
উন্নত সম্পর্কের জন্যেও সীমারেখা টানার দরকার আছে।
এই বিষয়ে মার্কিন ‘বাউন্ডারি কোচ’ ক্যামি অরেঞ্জ’য়ের ভাষ্য হল, “সংঘর্ষ আর খারাপ লোক থেকে দূরে থাকতেই নয়, সম্পর্কের মূল্য দিতেও সীমারেখা নির্ধারণের প্রয়োজন হয়।”
এর মাধ্যমে নিজের চাওয়া-পাওয়াগুলো অন্যের কাছে পরিষ্কার করা সম্ভব হয়। সম্পর্কে কতটুকু নিজের সময় আর কতটুকু একত্রে থাকার সময় সেটা জানা জরুরি।
নর্থ ক্যারোলিনা’র ‘শার্ল্ট’ নিবাসী থেরাপিস্ট নেড্রা গ্লোভার টাওয়াব বলেন, “একটি ভালোমাত্রার সীমারেখা পরিষ্কার ও সংক্ষিপ্ত ভাব প্রকাশ করতে পারে। কারণ আমরা বেশিরভাগ সময় অনেক কথা বলি, কিন্তু বোঝাতে পারি না কী চাই।”
নিজের সম্পর্কে জানা
অন্যদের সাথে কীভাবে যুক্ত আছেন? বা ভালোবাসার সঙ্গী কেনো আপনার সাথে লেগে আছে? এই প্রশ্নগুলোর জবাবের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যাবে সম্পর্কের যথার্থতা।
১৯৫০ সালে এই ধারণার প্রথম উদ্ভোব ঘটান ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানি জন বল্বি। ঘনিষ্টতা, অন্তরঙ্গতা ও সম্ভাব্য হুমকির ক্ষেত্রে সম্পর্কে ব্যক্তির আচরণ প্রকাশ প্রায় ‘অ্যাটাচমেন্ট স্টাইলস’য়ে ওপর।
চার ধরনের ‘অ্যাটাচমেন্ট স্টাইলস’ রয়েছে: এড়ানো, উদ্বিগ্ন, অগোছালো এবং নিরাপদ।