আরাভকে ফেরানোর অপেক্ষা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে!
সাদাকালো নিউজ
ফেরারি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দেশে ফেরাতে নানামুখী প্রচেষ্টা আলোর মুখ পায়নি। দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান খুলে শিরোনামে আসা আরাভকে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের পক্ষ থেকে নানামুখী প্রক্রিয়া এখনও দৃশ্যত কাজে আসেনি। দুবাইয়ে চিঠি চালাচালি, মোকদ্দমার কাগজপত্র পাঠানো ও ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করার ধাপগুলো বাংলাদেশ অতিক্রম করলেও অধরাই রয়ে গেছেন আরাভ খান।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুবাই পুলিশকে চিঠি পাঠালেও সাড়া মিলছে না। এক মাসের বেশি সময় আগে পাঠানো এ চিঠির কোনো উত্তর আসেনি দুবাই থেকে।
কবে আসবে দুবাই থেকে ফেরত চিঠি তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না পুলিশ সদর দপ্তর। ওই চিঠি দুবাই গ্রহণ করলেও তারা পরবর্তী কোনো তৎপরতা না দেখানোর ফলে আরাভকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার অপেক্ষা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।
দুবাই থেকে সাড়া না মিললেও হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ। খোঁজা হচ্ছে ভিন্ন উপায়। ভারতীয় দূতাবাসসহ কুটনৈতিক চ্যানেলে একাধিক বিকল্প প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।
এদিকে দুবাই পুলিশের কোনো তৎপরতা না থাকায় অনেকটা স্বস্তিতেই রয়েছেন আরাভ খান। ঈদ কেন্দ্র করে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ইতিমধ্যেই জানান দিয়েছেন তার ঘুরে দাঁড়ানোর তৎপরতা।
তবে বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ডেস্কও আরাভের বর্তমান অবস্থান নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি। অবশ্য আরাভ ইস্যুটি সরাসরি পুলিশ সদর দপ্তর পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা, আরাভ খানকে ফেরাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যেসব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রয়োজন তার সবটাই করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির পর আরাভ কোথায় সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকার বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, রেড নোটিশ জারি থাকা ব্যক্তির বিষয়ে কোনও তথ্য ইন্টারপোল দেয় না। ইন্টারপোল নিজেদের মতো তথ্য সংগ্রহ এবং কার্যক্রম চালায়। তারপরও বাংলাদেশ পুলিশের এনসিবি শাখা প্রতিনিয়ত ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
সূত্র বলছে, দুবাই পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব বিষয় নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। আরাভের অবস্থান শনাক্ত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যোগাযোগ চলছে। যেহেতু আরাভ ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই অবস্থান করছেন সে কারণে বাংলাদেশের পুলিশের পক্ষ থেকে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, হিরো আলম, চিত্রনায়িকা দীঘিসহ বেশ কয়েকজন দুবাইয়ে আরাভের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যান। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে পুলিশকাণ্ডে জড়িত আরাভ আলোচনায় উঠে আসে। এরপর গত ২৩ মার্চ বাংলাদেশি অপরাধী হিসেবে ইন্টারপোলের মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় রবিউলের নাম যুক্ত হয়েছে।
আরাভ খান নাম নেয়া ৩৫ বছর বয়সী রবিউলের জন্মস্থান বাংলাদেশের বাগেরহাটে। তবে তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে কলকাতা থেকে দুবাইয়ে গিয়ে ঠাঁই গাড়েন। যিনি এখন শত কোটি টাকার মালিক। তবে তার অর্থের উৎস নিয়ে আছে ধোঁয়াশা।