আন্দোলন আরও বেগবান হবে: মির্জা ফখরুল
সাদাকালো নিউজ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আদায় ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আমরা ২২টি রাজনৈতিক দল শুরু থেকেই গণতান্ত্রিক উপায়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সেই আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হচ্ছেন। আন্দোলন চলমান। আগামী দিনে সেই আন্দোলন আরও বেগবান হবে।
গুলশানে আজ শনিবার (৮ এপ্রিল) বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘বর্তমান অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার গণতান্ত্রিক পরিসরকে সংকুচিত করে ফেলেছে। এরা নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেনি, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে করা হয়েছে দলীয়করণ। জনগণকে দমন করে ক্ষমতায় থাকতে চায় তারা।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনকে আরও গতিশীল করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা একসঙ্গে যুগপৎভাবে আন্দোলন করছি। প্রথমত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না আর শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাব না, এই বিষয়ে ২২টি রাজনৈতিক দলই একমত।’
‘গণতন্ত্রবিহীন উন্নয়ন কার্যকর উন্নয়ন, সংঘাত সংঘর্ষ এড়িয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা হতে পারে’ বলে গতকাল জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির দেওয়া বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা উনাকে সম্মান করি। যদিও তার সাংবিধানিকভাবে কোনো ক্ষমতা নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনকে কেন্দ্র করে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা নিয়ে আমরা রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম। বেশ কিছু বিষয়ে উনি আশ্বস্ত করেছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো কোনোকিছু করার ক্ষমতা ওনার ছিল না।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘সংঘাত সংঘর্ষ সংকট সরকারের ওপর নির্ভরশীল। সরকার যদি সংকট এড়িয়ে চলতে চায় তখন তাকেই উদ্যোগ নিতে হয়। তাদের পদত্যাগ করে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। আগে তাদের ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ–তারপর আলাপ আলোচনার আহ্বানে বিবেচনা করবে বিএনপি।’
সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির কোনো দায় আছে কি না এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশ্বাস করেই তো আমরা সংলাপে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কি পরিণতি হয়েছে তা সবাই জানেন।’
আগুন কোনোভাবেই থামছে না এর কারণ কি হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীন সরকার। তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা করতে হয় না। মানবসেবায় যতগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না, তাদেরও জবাবদিহিতা নেই।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. নুরুল আমীন ব্যাপারী, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ড. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ব্যারিস্টার নাসিম খান, বাংলাদেশ পিপলস লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গরীব নেওয়াজ।