আকুর সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি লেনদেন না করার নির্দেশ
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি বৈদেশিক লেনদেন না করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইসব দেশের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রচলিত পদ্ধতি বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য বলা হয়েছে। দেশের অনেক ব্যাংক আকুর সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে ঐতিহ্যগত প্রক্রিয়া বা ব্যাংক টু ব্যাংক লেনদেন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, আকু হচ্ছে একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তির পদ্ধতি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মিয়ানমার, ভুটান এবং মালদ্বীপ ২ মাসের বাকিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে। ২ মাস পরপর দেনা সমন্বয় করে। এই দেনা পরিশোধ করা হয় আকুর সদস্য সংস্থা প্রতিটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে। বাংলাদেশের লেনদেন সম্পন্ন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে ব্যাংকগুলো আকুর সদস্য দেশগুলোর মাধ্যমে যেসব পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে সেগুলো সমন্বয় করে দেনা-পাওনা ঠিক করে। বাংলাদেশ আকুর সদস্য দেশগুলোতে রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করে বলে প্রতি কিস্তিতে দেনা থাকে। এই কারণে ব্যাংকগুলো দেনার সমপরিমাণ ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি হিসাবে জমা করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওইসব অর্থ দিয়ে দেনা শোধ করে।
কিন্তু সম্প্রতি কিছু ব্যাংক আকুর সদস্য দেশগুলোর মাধ্যমে পণ্য আমদানি করে দেনা সরাসরি পরিশোধ করে দিচ্ছে। এতে আকুর গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আকু থেকে ২ মাসের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার যে সহায়তা পাওয়ার কথা সেটি পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে ডলারের ওপর চাপ বেশি পড়ছে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আকুর সদস্য দেশগুলোতে লেনদেন না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, আকুর সদস্য দেশগুলো ২ মাসের বাকিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে। ২ মাস পর যেসব দেশ আমদানির চেয়ে বেশি রপ্তানি করে ওইসব দেশ ডলার পেয়ে থাকে। আর যেসব দেশ রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করে সেইসব দেশ দেনা থাকে। ফলে তাদের আমদানির বকেয়া অর্থ পরিশোধ করতে হয়। আকুর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করে। যে কারণে বাংলাদেশ প্রতি কিস্তিতেই দেনা শোধ করে। জুলাই-আগস্টের দেনা বাবদ বাংলাদেশ ১৩৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। শুধু ভারত, শ্রীলংকা ও পাকিস্তান আকুর মাধ্যমে রপ্তানি বেশি করে। অন্য দেশগুলো আমদানি বেশি করে।