আইসিইউতে কাতরাচ্ছে সন্তান, বাহিরে কুমার বিশ্বজিতের অধীর অপেক্ষা
সাদাকালো নিউজ
গেল মাসের ১৩ই ফেব্রুয়ারি কানাডার টরন্টোয় গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের একমাত্র ছেলে নিবিড় কুমার। বাংলাদেশে খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই দেশের বিনোদন অঙ্গনের মানুষ থেকে সাধারণ ভক্ত নিবিড়ের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন। কঠিন এই সময়ে পরিবারের পাশে থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ।
এ ঘটনার পরদিন স্ব-স্ত্রীক কানাডা ছুটে যান কুমার বিশ্বজিৎ। টরন্টোর হাসপাতালে বিষন্ন পায়চারি করে কাটছে তাদের দিন-রাত। অপেক্ষায় আছেন কবে ছেলে বাবা বলে ডেকে উঠবে। তাদের সঙ্গে ঢাকা থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন কুমার বিশ্বজিতের অনুসারী সংগীতশিল্পী কিশোর দাস।
দেশের একটি গণমাধ্যমকে সংগীতশিল্পী কিশোর দাস বলেন, নিবিড়ের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। এখনো ভর্তি আছেন টরেন্টোর হাসপাতালে। মাঝে শরীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এরপর থেকে আগের অবস্থানেই আছে নিবিড়। এখন পর্যন্ত কোনো সুসংবাদ নেই।
কিশোর দাশ আরও বলেন, কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন কথা হচ্ছে। আশায় থাকি নিবিড়ের ভালো হওয়ার সংবাদটা শোনার। জানি না আগামীতে কি হবে? সবাই নিবিড় ও তার পরিবারের জন্য প্রার্থনা করবেন।
উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে সুদূর কানাডায় গিয়ে এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে তিন তরুণ প্রাণ- আরিয়ান আলম দীপ্ত, অ্যাঞ্জেলা শ্রেয়া বাড়ৈ ও শাহরিয়ার খান মাহির। ১৩ই ফেব্রুয়ারি কানাডার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রাণ হারান তাঁরা। দুর্ঘটনার সময় কুমার বিশ্বজিৎপুত্র নিবিড় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশের ভাষ্য, গাড়িটি খুব দ্রুত গতিতে চলছিল। এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে উঠার সময় টার্ন নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। সড়ক বিভাজকে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি উল্টে ঘটে দুর্ঘটনা।
ঘটনার পরে অভিযোগ উঠে, স্থগিত লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন নিবিড়। তবে টরন্টো প্রিভিন্সিয়াল পুলিশ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৈধ লাইসেন্স নিয়েই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন নিবিড় কুমার। তবে গাড়িটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে চলছিলো।
দুর্ঘটনায় জীবন দেয়া তিনজন শিক্ষার্থীর মধ্যে অ্যাঞ্জেলা শ্রেয়ার দেহ ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে বাংলাদেশে পৌঁছায়। এরপর তাকে ফার্মগেটের হলি রোজারি চার্চে সমাহিত করা হয়।
অন্যদিকে তেশরা মার্চ ভোরে বাকি দুজন শিক্ষার্থী আরিয়ান আলম দীপ্ত এবং শাহরিয়ারের খান মাহিরের নিথর দেহ কফিনবন্দি হয়ে দেশে পৌঁছায়। তাদের দুজনকেই নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে সমাহিত করা হয়েছে।