অস্থির সময়ে বিদেশি অর্থ ছাড় কম, পরিশোধ বেশি
দেশে যে দুই মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলেছে, সেই জুলাই ও অগাস্টে বিদেশি ঋণ ছাড়ে বড় ধাক্কা এসেছে।এই দুই মাসে বিদেশি ঋণ ছাড় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কমেছে।
সোমবার প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।এতে দেখা যায়, জুলাই ও অগাস্টে দেশে মোট ৪৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার বিদেশি ঋণ আসে, যেখানে আগের অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ৭৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাইয়ের শুরু থেকে দেশ উত্তাল হয়ে পড়ে। আর ওই মাসে বিদেশি ঋণ ছাড় হয় ৩৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।পরের মাসে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটে। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার সরকারের। দুই দিন বাদে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার যাত্রা করে।
এই মাসে বিদেশি অর্থ ছাড় হয়েছে মাত্র ১০ কোটি ডলার।সাধারণত অর্থ ছাড়ের তুলনায় ঋণ পরিশোধের পরিমাণ কমই থাকে, আগের দুই অর্থবছরের চিত্র এমনটাই ছিল। তবে দেশের অস্থির সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে যে পরিমাণ বিদেশি অর্থ এসেছে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ গেছে ঋণ শোধ করতে।
ইআরডির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বিদেশি ঋণ শোধ করতে হয়েছে ৫৮ কোটি ৯২ লাখ ডলার।আগের বছরের একই সময়ে বিদেশি ঋণের সুদাসল বাবদ সরকারকে ৪০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল।
তার মানে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার ৪৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি পরিমাণ অর্থ গেছে বিদেশি ঋণ পরিশোধে।জুলাই ও অগাস্টে বিদেশি ঋণের কোনো প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। তবে এ সময় ২ কোটি ডলারের অনুদানের প্রতিশ্রুতি মিলেছে।
গত অর্থবছরে ৯৮৬ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। এ সময় বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে বাংলাদেশকে প্রায় ৩৩৬ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়।