কে এই নতুন অর্থমন্ত্রী?
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) গঠিত নতুন মন্ত্রীসভায় অনেকটা চমক হিসেবেই এসেছে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নাম।
দিনাজপুর-৪ আসন থেকে টানা চারবার নির্বাচিত সাংসদ আবুল হাসান মাহমুদ আলী এর আগেও দুইবার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে থেকে ২০১৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগের নির্বাচনকালীন সরকার এবং ২০১৪ সালের নবগঠিত মন্ত্রীসভায় তাকে আবারও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সমুদ্রসীমা নির্ধারণী মামলার নিষ্পত্তি এবং ছিটমহল বিনিময় তার সময়েই হয়।
২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নতুন মেয়াদে মন্ত্রিত্ব না পেলেও অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মাহমুদ আলী।
৮১ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ দায়িত্ব পেলেন গত মেয়াদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পরিবর্তে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেক দিন ধরেই ভুগছিলেন মুস্তফা কামাল।
বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নতুন মন্ত্রীদের তালিকা প্রকাশের পর সেখানে কিছুটা চমক হিসেবেই আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নাম আসে। এর কারণ গত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বাদ পড়ায় অনেকে ধারণা করেছিলেন, সেই পদে হয়ত পূর্বে দায়িত্ব পালন মাহমুদ আলীকে ফেরানো হবে।
১৯৪৩ সালের ২ জুন দিনাজপুরের খানসামার ডাক্তারপাড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে বিএ এবং ১৯৬৩ সালে এমএ করেন। এরপর ১৯৬৪ সালে সেখানেই প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে মাহমুদ আলী যোগ দেন তৎকালীন পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে। মুক্তিযুদ্ধের সময় কূটনৈতিক ফ্রন্টে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেন এবং ওই বছর মে মাসে মুজিবনগরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত হন।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের হয়ে বিভিন্ন মিশনে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন মাহমুদ আলী। তিনি ভুটান, অস্ট্রিয়া, চেক রিপাবলিক, জার্মানি ও নেপালে রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যে হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে তিনিই আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত।
ঢাকায় অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে তিনি ১৯৯২ সালে ভারতের সাথে তিন বিঘা করিডোর বাস্তবায়ন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। একই বছর মিয়ানমারের শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের আলোচনায় যোগ দেন।