সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনে আমাদের সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে যাতে প্রতিবেশ ও পরিবেশসম্মত বিধিব্যবস্থা পরিপালন করা হয়, সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সমুদ্র প্রতিবেশ সংরক্ষণ, সমুদ্র দূষণরোধ ও সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে উন্নয়নের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা ব্লু-ইকোনমি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’
আজ সোমবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে সামিল হই সকলে’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পরিবেশই প্রাণের ধারক ও বাহক। পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন ও সম্পদের অপরিমিত ব্যবহারের ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশ আজ অনেকটাই বিপর্যস্ত, হ্রাস পাচ্ছে জীববৈচিত্র, বিঘ্নিত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী গত ৭০ বছরে প্লাস্টিকের বহুমুখী ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, বিশেষ করে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অত্যাধিক উৎপাদন, যত্রতত্র ব্যবহার ও অব্যবস্থাপনার ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং উর্বর কৃষি জমি থেকে শুরু করে জলাশয়ের প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফুড চেইনের মাধ্যমে সামুদ্রিক মাছ থেকে শুরু করে অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী, গবাদি পশু ও মানুষের দেহে মাইক্রো প্লাস্টিক প্রবেশ করছে। ফলে সামুদ্রিক প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণি ক্যানসার ও বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। কাজেই, প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার হ্রাস, প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহার ও পুনঃচক্রায়ন বৃদ্ধি এবং প্লাস্টিকের কার্যকর বিকল্প উদ্ভাবনের এখনই সঠিক সময়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার প্লাস্টিকের উৎপাদন হ্রাস ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ২০২৩ এর মাধ্যমে পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, পরিবহণ, মজুত ও ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ এবং পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক আইন, ২০১০ ও পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক বিধিমালা, ২০১৩ এর মাধ্যমে পলিথিনের বিকল্প পাটের শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং প্রতিবেশের টেকসই ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।