চলে যাওয়ার আগে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন নায়ক রিয়াজের শ্বশুর
নাফিজা আক্তার
ফেসবুক লাইভে এসে নিজেকে নিজেই শেষ করে দিয়েছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান। বুধবার রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে তার বাসায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। চলে যাওয়ার আগে সব ধরনের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ‘ফেসবুকে মহসিন আলী খানের যারা ফলোয়ার ছিলেন, তারা ঘটনাটি দেখে ৯৯৯ এ ফোন দেন। পরে পুলিশ ধানমণ্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলা থেকে মহসিনের দেহ উদ্ধার করে।’
পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটে কেউ ছিলেন না। আবু মহসিন খান চলে যাওয়ার আগে সব ধরনের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলেন। উদ্ধার হওয়া দেহের পাশের একটি টেবিলে পাঁচটি কাগজ ও কাফনের কাপড় পাওয়া গেছে। কাগজে পারিবারিক নানা হতাশার কথা লেখা রয়েছে।
একটি কাগজে লেখা রয়েছে, কার কাছে তিনি কত টাকা পাবেন। ফ্ল্যাটের দরজায় সাদা কাগজে লেখা ছিল ‘মামা দরজা খোলা, ধাক্কা দিয়ে ভেতরে আসুন’। উদ্ধার হওয়া কাপড়ের ওপর একটি সাদা কাগজে লেখা ছিল, ‘আমি এই কাপড় পরে ওমরা করেছি। এই কাপড় দিয়েই যেন আমাকে দাফন করা হয়।’
আবু মহসিন এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন। ছেলে বড়। তিনি মাকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। আর মেয়ে থাকতেন বনানীতে।
ব্যক্তিজীবনে মানসিক অবসাদ, একাকীত্ব ও ব্যবসায়ীক ক্ষতিই মহসিন খানের পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রাথমিক কারণ হিসেবে মনে করছে পুলিশ। তবে স্বজনদের দাবি পারিবারিকভাবে তিনি অসুখী ছিলেন না।
শ্বশুরের নিজেকে শেষে করে দেওয়ার খবর শুনে নায়ক রিয়াজ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের রিয়াজ বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। পুলিশ তদন্ত করে যা পাবে, তার সঙ্গেই তাঁরা একমত পোষণ করবেন।
ফেসবুক লাইভে এসে মহসিন খান নিজের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি নিজের নিঃসঙ্গ জীবনযাপনে নানা কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘একা থাকা যে কী কষ্ট! যারা একা থাকে তারাই বোঝে। আমার এখন পৃথিবীর মানুষের প্রতি কোন আবেগ নেই। আমি প্রতারিত হয়েছি।’
ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ‘সিআইডির ফরেনসিক টিমসহ আমাদের ইউনিট কাজ করছে। বাসা থেকে মহসিন আলী খানের ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে। তার দেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।’