চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রের জানালায় ১২ ফুট লম্বা অজগর!
নাফিজা আক্তার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান গবেষোনা কেন্দ্র থেকে প্রায় ১২ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে অজগরটিকে উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ভেনম রিসার্চ সেন্টারের শিক্ষানবিশ গবেষক রফিকুল ইসলাম জানান, এরইমধ্যে সাপটিকে উদ্ধার করে গভীর জঙ্গলে অবমুক্ত করা হয়েছে।
রফিকুল জানান, আটকে পড়া অজগরটি বার্মিজ পাইথন প্রজাতির সাপ। সাপটি হয় রোদ পোহাতে অথবা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসতে পারে বলে ধারণা তাঁর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, দুপুর দুইটার দিকে তাঁরা দেখতে পান যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান গবেষোনা কেন্দ্রের গ্রীলের সাথে সাপটি পেঁচিয়ে আছে। কাঠের ফ্রেম বন্ধ থাকায় সাপটি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসে সাপটি উদ্ধার করে জঙ্গলে নিয়ে ছেড়ে দেয় বলেও জানান রাজ্জাক।
গবেষকেরা বলছেন, বার্মিজ অজগর বা বার্মিজ পাইথন, ময়াল অজগর বা রক পাইথনের তুলনায় ওজনে ভারী হয়। সুন্দরবনে এই প্রজাতির অজগরের আধিক্য বেশি। নির্বিষ এই সাপটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা নড়াচড়া করে না।
এই প্রজাতিটি একাকি বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়।
এই ধরণের অজগর সাপ সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা সাধারণত ইঁদুর, মুরগি, শূকর, শিয়ালসহ ছোট থেকে বড় আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপ প্রাণী ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
পাহাড়ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় এখানে বন্যপ্রাণীর আনাগোনা বেড়েছে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। এ বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসের লোকালয়ে আসতে দেখা গেছে মায়া হরিণ, শুয়োর ও বানরসহ নানা বন্য প্রাণী।
গেল ০৪ এপ্রিল দিবাগত রাতে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হয় এক বিশালাকৃতির অজগর। ১৫ ফুট লম্বা সাপটির ওজন ছিল ১০ কেজি।