খেলার মাঠ থেকে কুমিল্লার মেয়র
সাদাকালো নিউজ
কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন, সিটি করপোরেশন হওয়ার পর মেয়রও হন। চার দশকের রাজনৈতিক জীবনে ভোটের লড়াইয়ে নেমে আগে কখনও হারেননি মনিরুল হক সাক্কু। সেই হারের স্বাদ তাঁকে এবার দিলেন আরফানুল হক রিফাত। আর রিফাতের এই জয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রথম পেল আওয়ামী লীগের মেয়র।
কুমিল্লা শহরের মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা এস এম আতাউল হক ও হাছিনা হক দম্পতির ছেলে রিফাত। তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি স্বাধীনতার আগে স্কুলে থাকাকালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে। ১৯৭৪ সালে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন রিফাত। পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি এবং স্নাতক ডিগ্রি নেন। জিলা স্কুলে পড়াকালীন তিনি কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী হিসেবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে শেষ করে দেয়ার পর প্রতিবাদ করতে গিয়ে আইনী ঝামেলায় পড়েন রিফাত। তখন পালিয়ে বিদেশে চলে যান তিনি। পরে দেশে ফিরে ১৯৮০ সালে কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সভাপতির পদ লাভ করেন। ১৯৮১ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে বহিঃক্রীড়া ও ব্যায়ামাগার সম্পাদক নির্বাচিত হন রিফাত।
ওই সময় কলেজ ছাত্র সংসদে প্রথম জাতির পিতার ছবি উত্তোলন করেন তিনি। একই বছরে জামায়াত-শিবিরের আক্রমণের শিকার হন রিফাত। ওই সময় গুরুতর আহত হন তিনি। ১৯৮৩ থেকে ৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। দেশে ফিরে সক্রিয় হন এরশাদবিরোধী আন্দোলনে।
১৯৯৬ সালে রিফাত যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি কুমিল্লা জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান।
গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও রিফাত মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি ক্রীড়াবিদও। কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। চার দশকের বেশি সময় ধরে রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও রিফাতের ভোটের মাঠে আসা এবারই প্রথম। আর প্রথম বারেই করলেন বাজিমাত।