“কাবুল জয়ীদের কারও হাইস্কুল ডিগ্রিও নেই; তবুও আজ তাঁরা বিশ্ব সেরা।”
রাকিব হাসান
আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ নেয়ার এক মাসেরও কম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে কাবুল জয়ীরা। এ সরকার গঠন নিয়ে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের সাথে উদ্বেগে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ নতুন সরকারে এমন একাধিক ব্যক্তি আছেন, যারা মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বা নির্দেশদাতা। সেইসাথে অনেক দেশ আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন । বিশেষ করে আফগানস্তানে মানবাধিকার ও নারীদের অধিকার নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে অনেকের।
এসব বিতর্কের মধ্যে আলোচনার পালে হাওয়া দিয়েছেন দেশটির বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী।”পিএইচডি-মাস্টার্স ডিগ্রির কোনো দাম নেই” বলে মন্তব্য করেছেন শেখ মৌলবি নুরউল্লাহ মুনির। তার এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যমে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
আফগান শিক্ষামন্ত্রী শেখ মৌলভি নুরুল্লাহ মুনিরের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে তাঁকে উচ্চশিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়।
তিনি বলেন, ‘এখনকার দিনে পিএইচডি-মাস্টার্স ডিগ্রির কোনো মূল্য নেই। আপনারা দেখুন, ক্ষমতায় থাকা মোল্লা ও তালেবান কারওই পিএইচডি, এমএ, এমনকি হাইস্কুল ডিগ্রিও নেই। তবুও আজ তাঁরা বিশ্ব সেরা।”
মুনিরের এমন মন্তব্য নেটমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখছেন, এই লোকটি কেন শিক্ষা নিয়ে কথা বলছেন। আরেকজন লিখেছেন, শিক্ষা সম্পর্কে এ ধরনের লজ্জাজনক চিন্তাভাবনার ব্যক্তিদের ক্ষমতায় থাকার অর্থ হলো; যুব ও শিশু সমাজকে ধংস করা।
ধারণা করা হচ্ছে নতুন সরকার ঘোষণার পর পরই আমুল পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে আফগানিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থায় । কারণ সরকার প্রধান মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ জানিয়েছেন, নতুন আফগানিস্তান সরকার পরিচালিত হবে শরিয়া আইনেই।
৭ই সেপ্টেম্বর নতুন সরকারের ঘোষণা করে কাবুল জয়ীরা। যেখানে ইরান মডেলে তৈরি মন্ত্রিসভার ৩৩ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে প্রধান করে নতুন এই সরকারের আংশিক মন্ত্রিসভা ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে শেখ মৌলবি নুরউল্লাহ মুনিরকে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ছিল গোষ্ঠীটি। জারি ছিল শরিয়া আইন। সেই সময়ে নারীদের শিক্ষার কোনও অধিকার ছিল না। সেইসাথে ছিল নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা ।
২০ বছর আবারও আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তারা। যদিও এবার দলটি বলছে, আগের তুলনায় অনেক পরিবর্তন আসবে। নারীদের শিক্ষা ও চাকরি করার অধিকারও দেয়া হবে। তবে তা শরিয়া আইন অনুসারে।